১৮ জুন ২০২৫, ২:৩৭:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রভাতী বার্তা: শপথ গ্রহণ না করেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে সরকারি সভায় অংশ নিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ বা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিযোগ করেন এবং ইশরাকের কর্মকাণ্ড নাগরিক সেবায় বিঘ্ন ঘটালে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, ইশরাক হোসেন নগর ভবনের মিলনায়তন ও অফিস দখল করে নাগরিক সেবাদানে বাধা দিচ্ছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “উনি (ইশরাক হোসেন) অফিসিয়ালি কোনো দায়িত্ব নেননি। ইশরাক হোসেন নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে গিয়ে নগর ভবনের মিলনায়তন, অফিস দখল করেছেন।” আসিফ মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে নাগরিক সেবাদান শতভাগ বিঘ্নিত হতে পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নাগরিক সেবা বিঘ্নিত করা আরও বাড়লে অবশ্যই আমাদেরকে বাধ্য হয়ে কোনো কঠোর ব্যবস্থায় যেতে হতে পারে।”
গত দুই দিন ধরে ইশরাক হোসেন ডিএসসিসির নগর ভবনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সভায় অংশ নিচ্ছেন। এসব সভার ব্যানারে তাকে ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবে সম্বোধন করা হচ্ছে। সোমবার দুপুরে নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ব্যানারে তাকে ‘মাননীয় মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আইনানুযায়ী, শপথ না নিয়ে একজন ব্যক্তি মেয়রের এমন দায়িত্ব পালন করতে পারেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শপথ ছাড়াই নগর ভবনে মেয়রের ভূমিকায় ইশরাক হোসেনের সভা-সমাবেশে অংশ নেওয়া আইনগতভাবে বৈধ নয়। সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে।” তিনি মনে করেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ইশরাক হোসেনের মধ্যে আইনগতভাবে একটি সমঝোতা প্রয়োজন।
যদিও ইশরাক হোসেন মেয়র হিসেবে এখনো শপথ নিতে পারেননি, তবুও ইশরাক হোসেনের এই কর্মকাণ্ড ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে একটি নতুন ধরনের জটিলতা তৈরি করেছে। নাগরিক সেবাদান প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।