১০ জুন ২০২৫, ১২:২৩:৪৮
প্রভাতী বার্তা ডেস্ক: গাজা উপত্যকার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ জব্দ করেছে ইসরায়েল। রোববার রাত ১২টার দিকে জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় পৌঁছালে ইসরায়েলি নৌবাহিনী সেটিকে থামিয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে নিজেদের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যায়। জাহাজে থাকা ১২ জন মানবাধিকারকর্মী বর্তমানে ইসরায়েলের হেফাজতে আছেন।
জাহাজটি পরিচালনা করছিল আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (Freedom Flotilla Coalition – FFC)। তাদের দাবি, গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ, শিশুদের জন্য দুধ, স্যানিটারি সামগ্রী, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে ‘ম্যাডলিন’ রওনা দিয়েছিল।
জাহাজটি ১ জুন ইতালির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে গাজার উদ্দেশে।
জাহাজে থাকা ১২ জন মানবাধিকারকর্মীর মধ্যে রয়েছেন—
তাঁদের বর্তমানে ইসরায়েলের রামলে শহরের একটি আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানায় মানবাধিকার সংস্থা আদালাহ। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি গাজা উপকূলে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করছিল, তাই সেটিকে আটক করা হয়েছে। যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিরাপত্তার জন্য হেফাজতে রাখা হয়েছে। ইসরায়েল জাহাজটির কিছু ছবি ও তথ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে গ্রেটা থুনবার্গের ছবিও রয়েছে।
কেন ত্রাণ পাঠানো হচ্ছিল?
২০২৪ সালের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল পুরোপুরি গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে। শিশুরা অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে, হাসপাতালগুলো চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই ভয়াবহ অবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই ফ্রিডম ফ্লোটিলা এই মিশন শুরু করে।
তাঁদের মতে, ‘ম্যাডলিন’ ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও মানবিক উদ্যোগ, যার উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানো।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও গাজা সংকট, আন্তর্জাতিক ত্রাণ বাধা এবং মানবাধিকারের প্রশ্ন বিশ্বজুড়ে নতুনভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে।