সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জে পশুর হাটের শিডিউল নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২০, আটক ৮

২৯ মে ২০২৫, ১২:০৮:২৫

Clashes over the schedule of the animal market in Narayanganj, 20 injured, 8 detained.
নারায়ণগঞ্জে পশুর হাটের শিডিউল নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২০, আটক ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রভাতী বার্তা: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাটের শিডিউল ক্রয় নিয়ে বুধবার দিনভর দফায় দফায় সন্ত্রাসী হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদকসহ অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার (২৯ মে) সকাল থেকেই ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় অবস্থিত সদর উপজেলা কার্যালয় চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সদরের গোপনগর ইউনিয়ন থেকে আগত ৩০-৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উপজেলা কার্যালয় মাঠে অবস্থান নেয়। এদের মধ্যে কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কক্ষের সামনে এবং বাকিরা মাঠের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। যারা পশুর হাটের শিডিউল ক্রয় করে কার্যালয় থেকে বাইরে আসছিলেন, তাদের পথ আটকে দেহ তল্লাশি করে জোরপূর্বক শিডিউল ছিনিয়ে নিচ্ছিল ওই দলটি।

এই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রথম দফায় বিএনপি নেতা লাভলু, হানিফাসহ ১০-১২ জন তাদের মারধরের শিকার হয়ে আহত হন। পরবর্তীতে, বিকালে ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার উপজেলা চত্বরে এলে তার সামনেও ওই দলটি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধভাবে তার ওপরও হামলা চালায় এবং তাকে বেদম মারধর করে।

আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন – ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, বিএনপি নেতা লাভলু, হানিফা, এবং আরিফ।

রুহুল আমিন শিকদারের ওপর হামলার খবর তার সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা এবং স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় কয়েকজনকে গণপিটুনিও দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হামলাকারীদের কয়েকজন পালিয়ে গেলেও ৮ জন উপায়ন্তর না দেখে উপজেলা কার্যালয়ের একটি অফিস কক্ষে আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখান থেকে তাদের আটক করে। তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, “সদর উপজেলার ১৫টি পশুর হাটের শিডিউল বিক্রির কার্যক্রম চলছিল। এর মধ্যে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ ঘটনায় ফতুল্লা এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। পশুর হাটের নিয়ন্ত্রণ ও শিডিউল বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতি বছরই এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

আরও খবর:

বিবিধ