প্রবাস

দুবাইয়ে গোল্ডেন ভিসা এখন হাতের মুঠোয়: বাংলাদেশিরা পাচ্ছেন বিশাল সুযোগ

৭ জুলাই ২০২৫, ৯:৩৫:৫১

Golden visa in Dubai is now within reach: Bangladeshis are getting a huge opportunity
প্রতীকী ছবি

সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেতে বড় ধরনের বিনিয়োগ, যেমন ব্যবসা বা কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহাম (প্রায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের সম্পত্তি কেনার প্রয়োজন হতো। তবে, এবার অবিশ্বাস্যভাবে কম খরচে এই সম্মানজনক ভিসা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য। দুবাই চালু করেছে একটি নতুন ‘মনোনয়ন-ভিত্তিক’ গোল্ডেন ভিসা, যার জন্য বিশাল বিনিয়োগের আর প্রয়োজন পড়বে না।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নতুন নীতির আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা মাত্র ১ লাখ দিরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি) ফি দিয়ে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই উদ্যোগকে ‘সুবর্ণ সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছে রায়াদ গ্রুপ, যারা ভারত ও বাংলাদেশে এই মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রাথমিক পরীক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্ব পেয়েছে। রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব জানিয়েছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এই নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে প্রস্তুত।

কেন এই নতুন ভিসা এত গুরুত্বপূর্ণ?

এই নতুন মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর স্থায়িত্ব। প্রচলিত সম্পত্তি-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা সম্পত্তি বিক্রি হয়ে গেলে বা বিভক্ত হলে বাতিল হতে পারে, কিন্তু মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা একবার পেলে তা স্থায়ী হবে।

এই ভিসার মাধ্যমে মনোনীত ব্যক্তিরা নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পাবেন:

  • পরিবারকে নিয়ে আসার সুযোগ: আবেদনকারীরা তাদের পরিবারকে দুবাইতে নিয়ে আসতে পারবেন।
  • গৃহকর্মী ও গাড়িচালক রাখার সুবিধা: ভিসার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর্মী ও গাড়িচালক নিয়োগ করতে পারবেন।
  • কর্মসংস্থান ও ব্যবসা: দুবাইতে যেকোনো ব্যবসা বা পেশাদার কাজ করার অনুমতি পাবেন।

আবেদন প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা যাচাই:

রায়াদ কামাল আইয়ুব জানিয়েছেন, এই নতুন গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীদের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ বা অতীত ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হবে। এর মধ্যে অর্থপাচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড পরীক্ষা করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এমনকি আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও পরীক্ষা করা হবে।

কর্তৃপক্ষের মতে, এই ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার এবং ব্যবসাগুলো আবেদনকারীর কাছ থেকে সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ, পেশাদার পরিষেবা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কীভাবে উপকৃত হতে পারে, তা নির্ধারণ করা।

আবেদন জমা দেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে রায়াদ জানান, ভারত ও বাংলাদেশের ওয়ান ভাস্কো (One VASCO) সেন্টার, তাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল, অথবা ডেডিকেটেড কল সেন্টারের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। আবেদনকারীদের প্রাথমিক অনুমোদন নিজ দেশ থেকে নেওয়া সম্ভব হলেও, চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য দুবাই ভ্রমণ করতে হবে। রায়াদ গ্রুপ আবেদনপত্রগুলো সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তরে পাঠাবে, যারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

প্রাথমিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হলেও, এই পাইলট প্রকল্প সফল হলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট) আওতাভুক্ত দেশগুলোতেও এই নতুন ভিসা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশিদের জন্য দুবাইতে স্থায়ীভাবে বসবাস ও কাজের এক অভূতপূর্ব সুযোগ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও খবর:

বিবিধ