পর্যটন

বান্দরবানে ট্র্যাজেডি:অভিযানে নিখোঁজ তিন পর্যটকের মধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার

১৪ জুন ২০২৫, ১:৩১:৩২

Tragedy in Bandarban: Bodies of two of the three missing tourists recovered during the operation.
আলীকদম উপজেলার তৈন খালে ভেসে আসা নারী পর্যটকের মরদেহ

বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম ক্রিসতং পাহাড় অভিযানে গিয়ে খরস্রোতা তৈনখালে ভেসে নিখোঁজ হওয়া তিন পর্যটকের মধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় দেশজুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ময়মনসিংহের স্মৃতি আক্তার (২৪) এবং ঢাকা থেকে আসা শেখ জুবাইরুল ইসলাম (২৭)-এর মরদেহ উদ্ধার করা হলেও, এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ট্যুরের কো-হোস্ট হাসান নামে আরেক পর্যটক। উদ্ধার অভিযান চলছে, তবে দুর্গম এলাকা এবং নেটওয়ার্কবিহীন পরিবেশ উদ্ধার কাজকে কঠিন করে তুলেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১১ জুন) ‘ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপ’-এর অ্যাডমিন বর্ষার নেতৃত্বে ৩৩ সদস্যের একটি পর্যটক দল আলীকদমে আসে। তাদের লক্ষ্য ছিল আলীকদম উপজেলার দুর্গম ক্রিসতং পাহাড়, থানচির লিমান লিবলু এবং সাকাহাফং চূড়া জয় করা। দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পর্যটকরা গাইড সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যার সহায়তায় তৈনখালের পথে অগ্রসর হচ্ছিলেন। সে সময় খরস্রোতা তৈনখাল পার হতে গিয়ে তিনজন পর্যটক স্রোতে ভেসে নিখোঁজ হন।

নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে মাতামুহুরি নদীতে ভাসমান অবস্থায় শেখ জুবাইরুল ইসলামের (২৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জুবাইরুল রাজধানীর বাসাবোর সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ১০টার দিকে তৈনখালের আমতলী নৌঘাট এলাকা থেকে স্মৃতি আক্তার (২৪) নামে এক নারী পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দল। স্মৃতি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাকি সাভার গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের মেয়ে। স্থানীয়রা তৈনখালে ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ট্যুরের কো-হোস্ট মো. হাসান চৌধুরী। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম রিমন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, ক্রিসতং পাহাড় ভ্রমণে যাবার পথেই তৈনখাল পার হতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অপর পর্যটকের খোঁজে অভিযান চলমান রয়েছে।” ওসি আরও জানান, ঘটনাস্থল অত্যন্ত দুর্গম এবং নেটওয়ার্কবিহীন হওয়ায় উদ্ধার অভিযান চালাতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।

নিখোঁজ ২২ জনের দলের ১৯ জন সদস্যকে বর্তমানে আলীকদম থানায় রাখা হয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনা দেশের অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের মধ্যে সতর্কতা এবং দুর্গম অঞ্চলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আরও খবর:

বিবিধ