১৮ জুন ২০২৫, ১:৩৬:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রভাতী বার্তা:গত বছরের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ কল্যাণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (১৭ জুন) জারি হওয়া এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আইনি সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের পথ প্রশস্ত হলো, তেমনি সুবিধা গ্রহণে যেকোনো ধরনের প্রতারণার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ না হয়েও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রদান, তথ্য গোপন বা বিভ্রান্তিকর কাগজপত্র দাখিল করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা, আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে অপরাধীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ড প্রদান করতে হবে।
অধ্যাদেশে জুলাই শহীদ পরিবার এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সুনির্দিষ্ট পুনর্বাসন ও কল্যাণমূলক কার্যক্রমের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, আত্মকর্মসংস্থান, চিকিৎসা সহায়তা, আর্থিক সহায়তা।
অধ্যাদেশে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহত ব্যক্তিদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আহতদের আঘাতের গুরুত্ব অনুসারে তিনটি শ্রেণিতে (ক, খ, গ) ভাগ করা হয়েছে। ‘ক’ শ্রেণিতে অতি গুরুতর আহত (যেমন – এক চোখ/হাত/পা ক্ষতিগ্রস্ত, সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন, সম্পূর্ণ মানসিক বিকারগ্রস্ত) এবং ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণিতে আংশিক বা তুলনামূলক কম গুরুতর আহতদের রাখা হয়েছে।
এই অধ্যাদেশের অধীনে ঢাকায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন করা হয়েছে, যার মহাপরিচালক হবেন একজন অতিরিক্ত সচিব। এই অধিদপ্তর জুলাই অভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি শহীদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণে আর্থিক সুবিধা প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে।
এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার একদিকে যেমন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত শহীদ ও যোদ্ধাদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান ও দায়িত্ব নিশ্চিত করছে, তেমনি এর অপব্যবহার রোধে কঠোর বার্তা দিচ্ছে।