আন্তর্জাতিক

উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন – অস্থিরতার নেপথ্যে কী?

৮ জুন ২০২৫, ২:০০:৩৯

Uproar in Los Angeles, National Guard deployed - what is behind the unrest?
ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের কেন্দ্রস্থলে অভিবাসী অধিকার সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছেন (সংগৃহীত ছবি)

প্রভাতী বার্তা,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস। নথিপত্রহীন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানের জেরে সৃষ্ট এই অস্থিরতা সামাল দিতে এবার ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এই সিদ্ধান্তে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসম তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

রয়টার্স ও বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে নথিহীন অভিবাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করে মার্কিন প্রশাসন। এই অভিযানকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসের দক্ষিণে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীর সঙ্গে ফেডারেল এজেন্টদের সংঘর্ষ হয়। এজেন্টরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এর আগে শুক্রবার রাতেও ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এই অভিযানে আইসিই অন্তত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারের পরপরই বিক্ষোভকারীরা দেশটির ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে “মুক্তি দাও, মুক্তি দাও” স্লোগান দিতে থাকে। বিবিসি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসিই’র অভিযানে মোট ১১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধু শুক্রবারই ৪৪ জন।

হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে “সহিংস জনতা” আইসিই কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে “অবৈধ অপরাধীদের অনুপ্রবেশ” বন্ধ করার জন্য এই অভিযানগুলো “অপরিহার্য”। হোয়াইট হাউসের ভাষ্যমতে, “এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে, ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বোধ ডেমোক্র্যাট নেতারা তাদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করেছেন।” এই কারণেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সেনাকে মোতায়েনের জন্য একটি স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ডেমোক্র্যাট এই নেতা ট্রাম্পের পদক্ষেপকে “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উস্কানিমূলক” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি কেবল উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।

লস অ্যাঞ্জেলেসের এই পরিস্থিতি একদিকে যেমন অভিবাসন নীতির ওপর প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন, অন্যদিকে তেমনই স্থানীয় ডেমোক্র্যাট নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় রিপাবলিকান প্রশাসনের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে। অস্থির লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ডের উপস্থিতি পরিস্থিতিকে কোন দিকে নিয়ে যায়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

আরও খবর:

বিবিধ