১৩ জুলাই ২০২৫, ১:০৬:৩১
কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে নিখোঁজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের সন্ধান মেলেনি দীর্ঘ পাঁচদিনেও। নিখোঁজ এই ছাত্রকে খুঁজে বের করতে শনিবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে কক্সবাজার উপকূলে ড্রোন উড়িয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান অভিযান শুরু করেছে বিমান বাহিনী।
নিখোঁজ অরিত্র হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র। গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকত এলাকায় গোসল করতে নেমে তিনি আরও দুই বন্ধু কে এম সাদমান রহমান ও আসিফ আহমেদসহ সাগরের প্রবল ঢেউয়ে ভেসে যান। মর্মান্তিকভাবে, দু’ঘণ্টা পরই হিমছড়ি সৈকতে সাদমান রহমানের মরদেহ ভেসে আসে। পরদিন বুধবার (৯ জুলাই) সকালে ঘটনাস্থলের প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরারটেক সৈকতে পাওয়া যায় আসিফ আহমেদের মরদেহ। কিন্তু অরিত্র হাসানকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ড্রোন দিয়ে অনুসন্ধান অভিযান চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা উদ্ধারকাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। শনিবার থেকে ড্রোন দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সাগরে নিখোঁজ অরিত্র হাসানের সন্ধানে জেলা প্রশাসনের বহুমাত্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত আছে।”
জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী ও লাইফগার্ডের স্পিডবোট প্যাট্রল সম্ভাব্য সকল স্থানে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, বিশেষ করে মহেশখালী ও সোনাদিয়া সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক খোঁজ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বিত দল নিরলসভাবে নজরদারি করছে। স্থানীয় জেলে ও নৌযানগুলোর সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে এবং নৌপুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অরিত্র হাসানের বাড়ি বগুড়া জেলায়। তার বাবা সাকিব হাসান জাতীয় একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানার পর থেকেই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অবস্থান করছেন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় অপেক্ষার প্র প্রহর গুনছেন তারা, উদ্বিগ্ন হয়ে ক্ষণে ক্ষণে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। সাকিব হাসান জানান, সোমবার পরীক্ষা শেষে অরিত্র বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার যাওয়ার কথা জানিয়েছিল। তিনি নিষেধ করলেও অরিত্র গিয়েছিল। পরদিন সকালে ফোন পেয়ে তারা কক্সবাজারে ছুটে আসেন এবং এরপর থেকে সেখানেই ছেলের জন্য অপেক্ষা করছেন।