১ জুন ২০২৫, ৪:৫৮:০৪
চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ মে) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপান সফরের অংশ হিসেবে ড. ইউনূস টোকিওতে প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশ নেন। সফরের তৃতীয় দিন তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হয়, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে সহায়ক হবে।
জাপানি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১.০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় তিনটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হয়—
সফরের শেষ দিনে ড. ইউনূস টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’-এ বক্তব্য রাখেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সহযোগিতার ভিত্তিতে ছয়টি নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
একদিন আগেই, টোকিওর হিরাকাওচো চিয়োদা সিটিতে অনুষ্ঠিত মানবসম্পদ সেমিনারে বাংলাদেশ ও জাপান মানবসম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এতে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষ জনবল পাঠানোর পথ সুগম হয়। জাপানি উদ্যোক্তারা জানান, তারা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন।
সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ড. ইউনূসের বক্তব্য প্রদান ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ‘ফিউচার অব এশিয়া’-তে। তিনি সেখানে এশিয়ার ভবিষ্যৎ, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
এছাড়া তিনি মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ-এর সঙ্গে এক সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হন এবং বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাপানের বিখ্যাত সোকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের জন্য সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং তাঁর চার দিনের সরকারি সফর ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।