নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটে কেউ যদি নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি হাসিল বা চাঁদা দাবি করে, তবে কালক্ষেপণ না করে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে, ঈদ উদযাপন সার্বিকভাবে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে আরও একাধিক নিরাপত্তা নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশুর হাটে কোনো ব্যক্তি বা সিন্ডিকেট অতিরিক্ত অর্থ দাবি করলে বা কোনো প্রকার হয়রানির চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ থানা, পুলিশ ফাঁড়ি অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। জনগণের হয়রানি রোধ এবং সুষ্ঠুভাবে কোরবানির পশু কেনাবেচা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে পুলিশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা পরামর্শগুলো হলো:
- পশু পরিবহন: ট্রাক, লঞ্চ, নৌকা বা ট্রলারে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পশু বোঝাই করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া, পশুবাহী প্রতিটি পরিবহনের সামনে গন্তব্যস্থল বা পশুর হাটের নাম স্পষ্টভাবে লিখে ব্যানার আকারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
- হাটের স্থান নির্ধারণ: মহাসড়কের ওপর এবং রেললাইনের পাশে কোনো অবস্থাতেই কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।
- চামড়া পাচার প্রতিরোধ: সীমান্তবর্তী এলাকায় পশুর চামড়াবাহী কোনো যানবাহন যদি সীমান্তের দিকে সন্দেহজনকভাবে চলাচল করে, তবে সেটি পাচারের অপচেষ্টা হতে পারে। এমন কোনো ঘটনা নজরে এলে দ্রুত স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করতে অথবা জাতীয় জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
- আর্থিক লেনদেনে সতর্কতা: পশুর হাটে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বড় অঙ্কের নগদ টাকা বহনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনো নোট জাল বলে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে হাট কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে জানাতে হবে। এছাড়া, মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেনের (মোবাইল ব্যাংকিং) ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।
- নিরাপদ ঈদযাত্রা: ঈদযাত্রার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে ট্রেন, বাস, লঞ্চ ও ফেরিঘাটের শেষ মুহূর্তের অতিরিক্ত ভিড় এড়ানো যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস, ট্রেন, লঞ্চ বা স্টিমারের ছাদে, ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী খোলা যানবাহনে ভ্রমণ না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। নছিমন, করিমন, ভটভটির মতো অনুমোদনহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে চলাচল পরিহার করতেও বলা হয়েছে।
পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগরের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে, এই সকল নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চললে এবারের ঈদযাত্রা এবং কোরবানির সার্বিক কার্যক্রম আরও নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও আনন্দময় হবে।