প্রবাস

দক্ষিণ আফ্রিকায় মুক্তিপণ না পেয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে হত্যা

১৪ জুন ২০২৫, ৩:৩৬:৪২

Bangladeshi businessman killed after ransom not paid in South Africa.
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে বিদেশি নাগরিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার শিকার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। মুক্তিপণ না পেয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ইকবাল (২৭) নামের এই যুবককে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন। গত ২ জুন অপহরণের ১০ দিন পর ১২ জুন কুইন্সটাউনের একটি জঙ্গল থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।

পরিবার ও নিহতের ভগ্নিপতি শরিফুর রহমান ঢালী সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুন রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের কেন্ট্যানি এলাকায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে মালামাল নামানোর সময় চারজন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত আলমগীরকে জিম্মি করে অপহরণ করে। এই ঘটনার দু’দিন পর অপহরণকারীরা আলমগীরের স্ত্রীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ দক্ষিণ আফ্রিকান র‍্যান্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি টাকা) দাবি করে।

আলমগীরের পরিবার জানায়, তাদের আর্থিক সংকটের কথা জানালে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের অঙ্ক কমিয়ে ১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনে। কিন্তু পরিবার সেই বিশাল অঙ্কের টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। এর পরই নির্মমভাবে হত্যা করা হয় আলমগীরকে। দীর্ঘ দশ দিন নিখোঁজ থাকার পর, গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কুইন্সটাউনের একটি জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। “আমরা বহুবার অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাদের চাহিদামতো টাকা জোগাড় করতে পারিনি। আর সে কারণেই তারা ইকবালকে হত্যা করেছে,” ভগ্নিপতি শরিফুর রহমান ঢালী কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রভাতী বার্তাকে জানান।

নিহত আলমগীর হোসেন ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করতেন এবং সেখানে সফলভাবে নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। তার পরিবারে রয়েছেন মা, স্ত্রী এবং দুই পুত্র সন্তান। তারা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করেন। আলমগীরের নির্মম হত্যাকাণ্ড তার পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এবং স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

নিহতের পরিবার জানিয়েছে, মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ আগামী ১৫ জুন রাতে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে পৌঁছাবে।দক্ষিণ আফ্রিকায় সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি এবং হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।