১২ জুলাই ২০২৫, ১১:২৫:৫২
রেল মন্ত্রণালয়ের সভায় চলতি মাসেই প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে পারে।
ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুরনো রেলপথে এবার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। শিল্প অধ্যুষিত নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করে নির্মাণ হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম কর্ডলাইন রেলপথ, যা দেশের প্রধান দুই শহরের মধ্যে রেলপথে ৯০ কিলোমিটার দূরত্ব কমিয়ে দেবে এবং যাত্রীদের মূল্যবান সময় বাঁচাবে। এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৩টি নতুন স্টেশন নির্মাণের প্রস্তাবও রয়েছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথটি টঙ্গী-ভৈরব ও আখাউড়া হয়ে ঘুরিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল, যা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও অপরিবর্তিত ছিল। দীর্ঘদিনের আলোচনা-সমালোচনা এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর, ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ২৫ নভেম্বর রেল মন্ত্রণালয় কর্ডলাইন বাস্তবায়নের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। এটি দেশের রেল যোগাযোগে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত রেলপথটি ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের শ্যামপুর-জালকুড়ি-বন্দর-সোনারগাঁও হয়ে মেঘনা ও গোমতী (দাউদকান্দি) নদীর উপর দিয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা হয়ে কুমিল্লার পদুয়ারবাজার বিশ্বরোড সংলগ্ন শ্রীনিবাস পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এর একটি অংশ সংরক্ষিত শালবন বিহার এবং পাহাড়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে।
গত কয়েক মাসে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন অংশে এই প্রকল্পের সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে। আলীগঞ্জ, পিলকুনি, শিয়াচর, কুতুবপুর, জালকুড়ি, বন্দর ও সোনারগাঁয়ে প্রায় ২০০ মিটার প্রস্থ জমি নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, যেখানে বিদ্যুতের খুঁটি গণনা ও মাটি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের এই অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে, যার জন্য প্রায় ৭০ ফুট জমি অধিগ্রহণ হতে পারে। এছাড়া, জালকুড়ি (নম পার্কের পাশে), বন্দর ও সোনারগাঁয়ে ৩টি স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
‘কর্ডলাইন কারিগরি সহায়তা প্রকল্প’-এর পরিচালক মো. আবিদুর রহমান জানিয়েছেন, জুন মাসে এই প্রকল্পের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সর্বশেষ বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সমীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর কোন কোন প্রস্তাব বাস্তবায়ন সহজ হবে, তা চূড়ান্ত করা হবে। রেল মন্ত্রণালয়ের সভায় চলতি মাসেই প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে পারে।
এই কর্ডলাইন নির্মাণের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে প্রায় ৯০ মিনিট সময় সাশ্রয় হবে এবং এটি মূলত যাত্রী পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে। বিদ্যমান ৩২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি তখন মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত হতে পারে।