১৫ জুলাই ২০২৫, ৫:৪৭:৩৭
গত বছরের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অসামান্য অবদানকে স্মরণ করে গতকাল সোমবার (১৪ জুলাই) মধ্যরাতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন আকাশ সেজেছিল এক অসাধারণ ড্রোন শো’তে। ‘জুলাই উইমেনস ডে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে সে সময়ের উত্তাল দিনগুলোর নানা ঘটনা ও নারীদের বীরত্বগাঁথা ফুটিয়ে তোলা হয়।
ড্রোন শো দেখতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক সহস্র নারী শিক্ষার্থী। রাতের ঢাকার আকাশে যখন শত শত ড্রোন আলোর ঝলকানিতে নানা প্রতিকৃতি তৈরি করছিল, তখন দর্শকদের মাঝে ছিল এক অন্যরকম মুগ্ধতা।
এই ড্রোন শোতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন মুহূর্তের চিত্রকল্প ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ করে, অভ্যুত্থানের সময় ছড়িয়ে পড়া সেই সব আলোচিত স্লোগান ও বাক্য, যা গণমানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিল, সেগুলো আলোর রেখায় জীবন্ত হয়ে ওঠে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিতর্কিত মন্তব্য — ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?’ — এই বাক্যটি যেমন দেখানো হয়েছে, তেমনই প্রদর্শিত হয়েছে সেই সময়কার তুমুল জনপ্রিয় স্লোগান ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ এবং ‘মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’র মতো মর্মস্পর্শী বাক্য।
শুধু তাই নয়, এই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতিও ভেসে ওঠে রাতের আকাশে, যা দর্শকদের আবেগাপ্লুত করে তোলে। এছাড়াও, বুয়েটে ছাত্রলীগের নির্যাতনে শহীদ আবরার ফাহাদ এবং ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত তন্বীর প্রতিচ্ছবিও এই ড্রোন শোতে স্থান পেয়েছে, যা আন্দোলনকালে সংঘটিত বিভিন্ন নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে। পাশাপাশি, বিডিআর হত্যাকাণ্ড এবং শাপলা হত্যাকাণ্ডের মতো দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও বেদনাদায়ক প্রতিচ্ছবিগুলোও ড্রোন শোতে প্রদর্শিত হয়েছে, যা দর্শকদের ইতিহাসের নানা অধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
এই ড্রোন শো শুধুমাত্র একটি দৃশ্যপট ছিল না, বরং এটি ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নারীদের আত্মত্যাগ, প্রতিরোধ এবং অবিস্মরণীয় অবদানের প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি।