৩ জুন ২০২৫, ২:৩০:২৪
প্রভাতী বার্তা, ঢাকা: সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা মঙ্গলবারও (৩ জুন, ২০২৫) অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে সকাল ১১টা থেকে এই আলোচনা শুরু হবে।
সোমবার বিকেলে শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় পর্বের এই আলোচনা। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
গত বছরের অক্টোবরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে এই কমিশনগুলো তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়। এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব একটি ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে তাদের মতামত সংগ্রহ করে কমিশন। এরপর ২০ মার্চ থেকে শুরু হয় দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের প্রথম পর্বের আলোচনা, যা গত ১৯ মে শেষ হয়। প্রথম পর্বে মোট ৩৩টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
গত ২৬ মে ঐকমত্য কমিশন একটি সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম ধাপের আলোচনার অগ্রগতি তুলে ধরে। এই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ঐকমত্য হওয়া এবং অমীমাংসিত থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বা সুপারিশের কথা জানান।
কমিশন সেদিন জানিয়েছিল, ক্ষমতার ভারসাম্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একজন প্রধানমন্ত্রী কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে – এ ধরনের মৌলিক ও কাঠামোগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
তবে ঐকমত্য কমিশন আশার কথা শুনিয়েছে যে, এসব বিষয়ে অনেক দলই আরও আলোচনার আগ্রহ দেখিয়েছে এবং আলোচনায় নমনীয়তা প্রকাশ করেছে। এই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা চলছে, যেখানে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে একটি সমাধানসূত্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা থেকে কী ফল আসে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে।