আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য

২১ মে ২০২৫, ৪:৫৬:০৮

The United Kingdom has suspended trade talks with Israel.

গাজায় চলমান সামরিক আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি দেশটির রাষ্ট্রদূতকেও তলব করেছে লন্ডন। মঙ্গলবার (২০ মে) হাউজ অব কমন্সে দেওয়া এক বক্তব্যে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এই ঘোষণা দেন। খবর বিবিসির।

তিনি জানান, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নতুন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ‘২০৩০ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রোডম্যাপ’ অনুযায়ী দুই দেশের সহযোগিতা পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ল্যামির ভাষায়, নেতানিয়াহু সরকারের কার্যকলাপ এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে যুক্তরাজ্যকে।

গাজায় মানবিক সহায়তার ওপর আরোপিত অবরোধের বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরে ডেভিড ল্যামি বলেন, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র দপ্তরে ডেকে জানানো হয়েছে যে, ত্রাণ সহায়তার পথ রুদ্ধ করা সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, গাজার পরিস্থিতি এখন ‘অন্ধকারের একটি নতুন ধাপে’ প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার মাত্র ১০টিরও কম ত্রাণবাহী ট্রাক সেখানে প্রবেশ করতে পেরেছে, যা ‘চরম লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় তিনি জানান, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাজ্য তিন ব্যক্তি ও চারটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

ডেভিড ল্যামি বলেন, ইসরায়েল সরকারের কাজকর্ম ও বক্তব্য তাদের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে সচেষ্ট থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু সরকারের কর্মকাণ্ড পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

ইসরায়েলের জনগণের প্রতি বার্তা দিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ তাদের সরকারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক নষ্ট করছে। অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, এখনই অবরোধ শেষ করুন এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিন।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্তের জবাবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে জানান, বাইরের কোনো চাপ ইসরায়েলকে তার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথ থেকে সরাতে পারবে না।

তিনি আরও দাবি করেন, ডেভিড ল্যামির বক্তব্যের আগেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা খুব একটা অগ্রসর হয়নি। যুক্তরাজ্য যদি ‘ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব’ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবেচনায় অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকে এগোয়, সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত—এমন মন্তব্য করেন তিনি।