১৬ জুলাই ২০২৫, ৩:১৭:২৮
দীর্ঘদিনের অভিযোগ আর সমালোচনার মুখে অবশেষে বদলি হলেন সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তাকে বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য এবং হাসপাতালকে ব্যক্তিগত চেম্বারে পরিণত করার মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতাল কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের কতিপয় অসাধু ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এবং খোদ সিভিল সার্জনের উদাসীনতার কারণেই এতদিন ধরে এসব অনিয়ম চলে আসছিল। তাদের মতে, এর দায় সিভিল সার্জন কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। ডা. মোস্তাফিজের কার্যকলাপের কারণে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ এলাকাবাসীর মধ্যেও তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছিল।
ডা. মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে তার মাসিক কমিশন চুক্তি।এই চুক্তির আওতায় পরিচালিত একটি দালাল চক্র হাসপাতালের ভেতর থেকেই রোগীদের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পাঠাতো।
অভিযোগ ওঠে, অফিস চলাকালীন সরকারি দায়িত্ব পালন না করে নিয়মিত প্রাইভেট রোগী দেখতেন। এমনকি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছোটখাটো অপারেশন, ইনজেকশন ও প্লাস্টার বন্ধ করে এসব সেবা তিনি তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চালু করেন। সরকারি ওষুধ থাকা সত্ত্বেও প্রেসক্রিপশনে নিয়মিতভাবে বাইরের দামি ওষুধ লেখা হতো, আর এসব ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে বড় অঙ্কের সুবিধা নিতেন তিনি।
সরকারি ফিট সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে আসা রোগীদেরও টাকার বিনিময়ে সেই সার্টিফিকেট দেওয়া হতো। হাসপাতালের কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও স্টাফদের সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে তুলেছিলেন, যার মাধ্যমে হাসপাতাল জুড়ে তিনি আধিপত্য বিস্তার করতেন। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে সেই চক্রের মাধ্যমে তাকে শোকজ, বদলি বা অপপ্রচারের শিকার হতে হতো।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আহমেদ তিথির মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বদলি আদেশ তালিকা হতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।