৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৬:১২
১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত থাকলেও, করদাতাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা তাদের করের হিসাব-নিকাশে বড় প্রভাব ফেলবে। বিশেষত কৃষি খাত, বেসরকারি চাকরিজীবী এবং পারিবারিক দান-এর ক্ষেত্রে এসেছে নতুন সুবিধা।
১. কৃষি খাতের আয়ে করমুক্তি: ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় এখন করমুক্ত দেশের কৃষি খাতকে আরও উৎসাহিত করতে এবং বাণিজ্যিক কৃষি কার্যক্রমকে সমর্থন জানাতে এবারের বাজেটে একটি উল্লেখযোগ্য ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কোনো করদাতার কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করমুক্ত থাকবে। এটি সেই সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি দারুণ সুযোগ, যারা শহর বা গ্রাম থেকে জমি কিনে বা লিজ নিয়ে শাকসবজি, ফলমূল বা অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদন করছেন। এর মাধ্যমে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২. বেসরকারি চাকরিজীবীদের আয় গণনায় বাড়তি সুবিধা বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য করযোগ্য আয় গণনায় ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে। এতদিন বেতন ও ভাতাসহ সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর কর ছাড় পাওয়া যেত। এবার সেই সীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। ফলে, বেসরকারি খাতে কর্মরত অসংখ্য কর্মী কিছুটা করের বোঝা থেকে মুক্তি পাবেন এবং তাদের হাতে ব্যয় করার মতো অর্থের পরিমাণ বাড়বে।
৩. আপন ভাই-বোনের দান এখন করমুক্ত সম্পর্কীয় দান নিয়ে একটি দীর্ঘদিনের জটিলতার অবসান ঘটিয়ে এবারের বাজেটে আপন ভাই-বোনের দেওয়া দানকে করমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতদিন শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা এবং সন্তানের মধ্যে সম্পত্তির দান করমুক্ত থাকত। এই নতুন নিয়মের ফলে পারিবারিক জমি, ফ্ল্যাটসহ যেকোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ভাই-বোনের মধ্যে হস্তান্তর করা আরও সহজ হবে এবং এর ওপর কোনো আয়কর বসবে না। এমনকি বিদেশে বসবাসরত ভাই-বোন অর্থ পাঠালেও সেটি করমুক্ত থাকবে। এটি পারিবারিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে এবং আইনি জটিলতা কমাবে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: যদিও করমুক্ত আয়ের সাধারণ সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকাই রাখা হয়েছে (নারী ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য ৪ লাখ টাকা), করদাতাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাজেটে আনা অন্যান্য পরিবর্তনগুলো সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে।
করদাতাদের সুবিধার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সকল করদাতাকে সময়মতো তাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।