১২ জুলাই ২০২৫, ৪:২৭:৫২
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন ঘিরে এক নতুন আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে যশোর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি ঘোষণা দেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের আন্দোলন আসছে এবং ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়তে এনসিপি বদ্ধপরিকর।
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে সরাসরি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তাদের ‘কোটি মানুষের দল’ দাবির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ইনসাফ ও ন্যায়ের পক্ষে থাকলে একজন কর্মী এক লাখ মানুষের থেকেও শক্তিশালী হয়ে যায়।” তিনি আরও বলেন, যারা সংস্কারে বাধা দিচ্ছে, তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দিচ্ছে। তিনি স্পষ্ট জানান, বিচার ও সংস্কার ছাড়া দেশের মানুষ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না এবং প্রয়োজনে এসব দাবি বাস্তবায়নে আরও একটি গণ-অভ্যুত্থান ঘটানো হবে।
এনসিপি আহ্বায়ক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “আমরা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে দেব না। পুলিশ প্রশাসন নির্দলীয় থাকবে। আমরা চাই না সেনাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তা গুমের সঙ্গে জড়িত থাকুক।” তিনি বিগত ১৬ বছরে নির্বাচন কমিশনের দলীয়করণের তীব্র সমালোচনা করে নিরপেক্ষ নিয়োগের দাবি জানান। “আমরা বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে দেব না,” দৃঢ় কণ্ঠে বলেন নাহিদ।
পথসভায় এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, তারা সংস্কারের কথা বলছেন, আর একটি মহল সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের কথা বলছে। তিনি মন্তব্য করেন, “এখনো শেখ হাসিনার পুলিশ বহাল আছে, শেখ হাসিনার প্রশাসন বহাল আছে, আর তারা শুধু নির্বাচন চায়।” আখতার হোসেন ভারতের প্রতিও কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। এখানে কোনো বিদেশির দাদাগিরি চলবে না।”
এর আগে সকালে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা যশোরের একটি হোটেলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, কেউ কেউ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ‘মব’ বলার চেষ্টা করছে, যা দুঃখজনক। তিনি স্পষ্ট করেন, এনসিপি নির্বাচনবিরোধী দল না হলেও, গণহত্যা, মৌলিক সংস্কার এবং নতুন সংবিধান ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
নাহিদ ইসলাম নড়াইলেও একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, “গণহত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”