প্রভাতী বার্তা, নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টার জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পটুয়াখালীর পায়রাগঞ্জ ফেরীঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের 'মিম শরৎ গ্রুপ'-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহাগ মিয়াকে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় তাকে তার ব্যবহৃত গাড়িতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের তৎপরতায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে, তবে চালকরা পলাতক। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, অপহরণের পেছনে চালকের যোগসাজশ থাকতে পারে।
পটুয়াখালী ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার রাত ৯টার দিকে ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জের অফিস থেকে তার নিউ চাষারার ৮৯নং জামতলার বাসায় ফিরছিলেন। পথে তুলারাম কলেজ গেটের সামনে ৫-৬ জনের একদল সন্ত্রাসী তার গাড়ির গতি রোধ করে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠে পড়ে। এরপর তাকে মারধর করে হাত-পা ও চোখ বেঁধে ফেলে এবং গাড়ি চালিয়ে পটুয়াখালীর দিকে নিয়ে যায়।
সোহাগ মিয়ার অপহরণের খবর তার পরিবারের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশকে জানানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, তারা সঙ্গে সঙ্গে সোহাগের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সর্বশেষ অবস্থান পটুয়াখালীতে চিহ্নিত করেন এবং পটুয়াখালী পুলিশের সহায়তা চান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই যৌথ তৎপরতার কারণে অপহরণকারীরা বেকায়দায় পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার সকাল ৬টার দিকে অপহরণকারীরা সোহাগ মিয়াকে তার গাড়িসহ পটুয়াখালীর পায়রাগঞ্জ ফেরীঘাটে নির্মাণাধীন সেতুর বালির মাঠে ফেলে রেখে অন্য একটি গাড়িতে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা দুপুর ১২টার দিকে দুটি গাড়ি দীর্ঘক্ষণ পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কৌতূহলবশত কাছে যান। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় সোহাগ মিয়া সাহায্য চাইলে তারা দ্রুত থানা পুলিশকে খবর দেন। পটুয়াখালী ডিবি, সদর থানা ও নৌপুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়ার বাবা আব্দুস সালাম এবং মা মোসা. রহিমা বেগম। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের একটি দল তাকে পটুয়াখালী থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য রওনা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো থানায় অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি।
এদিকে, সোহাগের গাড়িচালক নিখোঁজ রয়েছেন এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই অপহরণের ঘটনায় চালকের যোগসাজশ থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং তদন্তে যার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হবে, তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
www.provatibarta.net www.facebook.com/provatibarta.online www.youtube.com/@ProvatiBarta